
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ❝রাখিব নিরাপদ দেখাবো আলোর পথ❞ এই স্লোগানকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধুর মানুষকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে ডিজিটাল বাংলাদেশে নতুন উদ্যামে যাত্রা শুরু করে দেশের বিভিন্ন কারাগার। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগারসহ ৫৫টি জেলা কারাগারে বন্দীরা পাচ্ছে পুস্টি সম্মত খাবার, অত্যাধুনিক চিকিৎসাসহ থাকার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা।
কিন্তু কথায় আছে ❝কয়লা ধুলে ময়লা যায় না❞। এর অন্যতম কারন হিসেবে বলা যেতে পারে দূর্নীতিবাজদের কালো থাবা। কেননা দূর্নীতিবাজ কর্মচারী কর্মকর্তাদের কালো থাবার কারনেই অনিরাপদ হয়ে উঠে কারাগার।
তাই তো কারা জগতের ইতিহাসে কারাগার নিয়ে দুর্নীতির দায়ে সাবেক ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপালের ৮ বছরের সাজা এবং প্রতারণার মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করা ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশীদসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা এখন সবচেয়ে বড় নজীর।
কিন্তু প্রশ্ন আসছে, ডিআইজি পার্থ গোপাল এবং ডিআইজি বজলুর রশিদই কি শুধু দূর্নীতি করেছেন,আর বাকী সবাই কি তাহলে ধোয়া তুলসী পাতা ?
তবে সাম্প্রতিক সময়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার ও আলোচিত বগুড়া কারাগার নিয়ে এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
২০২১ সালের ১৯ শে অক্টোবর দেশের শীর্ষ জাতীয় দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় কারা দূর্নীতি নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ হয় যার শিরোনাম ছিল ❝ বিস্তর অভিযোগ তবুও বহাল ৪২ কারা কর্মকর্তা ❞ আর এই ৪২ কারা কর্মকর্তার অন্যতম ছিলেন – বর্তমান রাজশাহী ডিআইজি প্রিজন কামাল হোসেন।
দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত সংবাদের লিংক –
https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/477522/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A7%8B%E0%A6%97-%E0%A6%A4%E0%A6%AC%E0%A7%81%E0%A6%93-%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B2-%E0%A7%AA%E0%A7%A8-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BE-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE
২০২১ সালে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত ডিআইজি (প্রিজন্স) ছিলেন কামাল হোসেন। কিন্তু ২০২০ সালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কাগারারের সিনিয়র জেল সুপার হিসাবে দায়িত্বে থাকাকালে তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ নানা অভিযোগ ওঠে।সেই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগে দিদারুল আলম মাসুদ জানান- টাকার বিনিময়ে জঙ্গি ও কারাবন্দি বিএনপি নেতাকর্মীদের অবৈধ সুবিধা দিতেন কামাল হোসেন। কারাগারে জেলকোড অনুযায়ী বন্দিদের মানসম্পন্ন খাবার দেওয়া হয় না। সরবরাহকারীদের কাছ থেকে কমিশন নিয়ে নিুমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। কারাগারের ভেতর মাদক সরবরাহের সুযোগ করে দেন কামাল হোসেন। আদালতে হাজিরা থাকলে জেলকোড অনুযায়ী বন্দিদের দুপুরের খাবার বাবদ টাকা দেওয়ার বিধান থাকলেও কামাল হোসেনের নির্দেশে তা দেওয়া হচ্ছিল না। আমি এর প্রতিবাদ করার পর থেকে জনপ্রতি ২৬ টাকা করে দেওয়া হয়। সাধারণ বন্দিদের চেয়ে চিহ্নিত অপরাধীদের মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ দেন বেশি। কারা অভ্যন্তরে প্রতিবাদ করায় আমি কামাল হোসেনের রোষানলের শিকার হয়েছি।
এদিকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন অভিযোগ আসতে শুরু করেছে ডিআইজি কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে। অপকর্ম ও বগুড়ায় ফাঁসির আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাসহ বিস্তর অভিযোগ থাকার পরও গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল আছেন রাজশাহী কারা অধিদপ্তরের ডিআইজি (প্রিজন্স) কামাল হোসেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগও। এছাড়া আছে দায়িত্বে অবহেলায় বন্দি পলায়ন, টাকার বিনিময়ে কারারক্ষিদের বদলি, প্রকাশ্যে ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ জমা দিয়েছেন কারারক্ষি মনিরুজ্জামান। এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও কারা অধিদপ্তর তদন্ত করছে না বলে জানান এই ভুক্তভোগী কারারক্ষী।
সার্বিক বিষয়ে সাক্ষাৎকার নেয়ার জন্য বারংবার ডিআইজি (প্রিজন্স) কামাল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেস্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে অভিজ্ঞমহলের সচেতন নাগরিক সমাজের বক্তব্য – সমূলে দূর্নীতি উৎখাত করতে এখুনি যদি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা না হয় তবে ঐ দিন দূরে নেয় যে, বেনজিরের মত আরও একটি কালো অধ্যায়ের সূচনা ঘটবে।