
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হল ও মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সল্পমূল্যে স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করতে চান মো. আয়াত। অনলাইনে খাবার অর্ডার নিয়ে নিজেই পৌঁছে দেন প্রাপকের হল ও মেসে।
ক্যাম্পাসের অদূরে বিনোদপুরের আমজাদের মোড়ের বাসিন্দা মো. আয়াত। ২০১৩ সালে দোহার নবাবগঞ্জ ডিএন কলেজ থেকে তিনি স্নাতক (সম্মান) শেষ করেন। স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে তার সংসার। বড় মেয়ে মোসা. সানজিলা আহমেদ পড়াশোনা করেন দশম শ্রেণিতে। ছোট মেয়ে মোসা. হাইফা পড়াশোনা করেন দ্বিতীয় শ্রেণিতে।
স্নাতক শেষ করে আয়াত দীর্ঘ ৯ বছর সৌদি আরবে ছিলেন। কয়েক বছর আগে তিনি সৌদি থেকে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফিরতে দেরি হওয়ায় আয়াত হারিয়েছেন তার চাকরির বয়স। ফলে তিনি ভিন্ন কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত নিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সল্পমূল্য স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আয়াত বলেন, “আমার চাকরির বয়স শেষ হয়ে গেছে। তাই বেকার না থেকে আমি চিন্তা করলাম রাবি শিক্ষার্থীদের সল্পমূল্য স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করব। এতে আমারও কিছু লাভ হবে এবং শিক্ষার্থীরাও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পারবে। আমি খাবারের দামও শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে নির্ধারণ করেছি। দুপুর ও রাতের খাবার ছাড়াও শিক্ষার্থীরা বার্গার, কোল্ড কফি, ফ্রেন্স ফ্রাই, চিকেন ফ্রাই, চিকেন সুপ, হালিম, ফালুদা ও ফিরনী খেতে পারবেন। শিক্ষার্থীরা এ সকল খাবার আয়াত খাবার ঘর পেইজে অর্ডার করতে পারবেন। খাবার অর্ডার করার ২ ঘন্টার মধ্যেই আমি খাবার পৌঁছে দেই।”
খাবারের রিভিউ সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মেহারার খন্দকার নিবিড় বলেন, “অনলাইনে হঠাৎ এক ছোট ভাইয়ের মাধ্যমে ‘আয়াত খাবার ঘর’র সম্পর্কে জানতে পারি। ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে খাবারের রিভিও শুনে আমার হলের দুই বন্ধুসহ একদিন খাবারের অর্ডার দিই। আলহামদুলিল্লাহ খাবারের মান খুবই ভালো। আমরা যারা হলে থাকি তাদের মধ্যে অনেকে হলের খাবার খেতে পারি না। এছাড়া সময়ের জন্য রান্নাও করতে পারি না। বাইরে খাবার খেলে খরচের পরিমাণটাও বেশি হয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, “‘আয়াত খাবার ঘর’ সল্পমূল্যে মানসম্মত খাবার পরিবেশন করছে। আমিসহ আমার বন্ধুরা তাদের থেকে খাবার খাচ্ছি। তাদের উদ্যোগটা রাবি শিক্ষার্থীদের জন্য খুব উপকারী হবে। তাদের খাবারের স্বাদ অনেকটা বাড়ির খাবারের মতো।
ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান পলাশ বলেন, “‘আয়াত খাবার ঘর’ অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে, পরিষ্কার পরিচ্চন্নভাবে খাবার সরবরাহ করে। তাদের খাবার খাওয়ার পর আমি আমার বাড়িতে তৈরি খাবারের স্বাদ পাই। রাজশাহীতে মেসে সাধারণত স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পাওয়া যায় না। কিন্তু আয়াত খাবার ঘরে স্বল্পমূল্যে ভালো খাবার পরিবেশন করে। তাদের একটি বিষয় আমার কাছে ভালো লেগেছে সেটি হলো উনাদের ফোন দিলেই বাসায় হোম ডেলিভারি দিয়ে যায় বিনামূল্যে। যা অত্যন্ত সুন্দর উদ্যোগ।”
আয়াতের সকল খাবারগুলো পাওয়া যাবে নিম্নোক্ত পেজটিতে। https://www.facebook.com/profile.php?id=61553742713735&mibextid=ViGcVu