Home » হত্যাকাণ্ডের শহর চাঁপাইনবাবগঞ্জ: একে বাঁচাবে কে?? …….

হত্যাকাণ্ডের শহর চাঁপাইনবাবগঞ্জ: একে বাঁচাবে কে?? …….

by নিউজ ডেস্ক
৯৪ views

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে একসময় সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ডের পর বিবৃতি এসেছিল “পুলিশ মানুষের বেডরুম পাহারা দেবে নাকি?” এবারে সেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বহীনতায় লাশের নগরীতে রূপ নিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আর বিবৃতিতে বলা হয়েছে এসব নাকি বিচ্ছিন্ন ঘটনা!! অথচ দেশের মানুষ আজ এই জেলা শহর চাঁপাইনবাবগঞ্জের বুকে দেখছে নারায়নগঞ্জের সেই নির্মমতার চিত্র!!
বিগত দিনের সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২০১৩-১৪ সালে রাজনৈতিকভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠলে সহিংসতা রোধে ব্যর্থ সেসময়ের পুলিশ প্রশাসন এক প্রতিবেদনে এখানকার মানুষকে প্রকৃতিগতভাবে সহিংস বলে উল্লেখ করেছিল। অথচ পরবর্তীতে সেই পুলিশ প্রশাসনের প্রচেষ্টায় রাজনৈতিক সহিংসতা রোধ করা গেছে এবং আগের চিত্রায়ন ভুল প্রমাণিত হয়েছে।

কয়েক বছরের ব্যবধানে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের আন্তরিকতায় চির ধরেছে বলেই হয়তো
রাজনৈতিক সেই সহিংসতাকে ম্লাণ করে দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আবারো ঘটে চলেছে একের পর এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড।

বিশেষত গত ১৯ তারিখে সংঘটিত খায়রুল আলম জেম হত্যাকাণ্ড জনমনে একইসাথে ব্যাপক ক্ষোভ ও ভীতির সঞ্চার করেছে। যখন একজন মাঠ থেকে উঠে আসা জনপ্রিয় সাবেক কাউন্সিলর রোযা অবস্থায় ইফতার কিনতে গিয়ে শহরের গুরুত্বপয়েন্টে প্রকাশ্য দিবালোকে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তখন আসলেই ল এন্ড অর্ডারের চরম অবনতি জনতার সামনে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

বিগত কাউন্সিলে জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী যুবলীগ নেতা জেম বেশ কিছুদিন থেকেই জীবননাশের আশঙ্কায় বিভিন্ন মহলে পরিত্রাণের আশায় বারবার যোগাযোগ করে প্রতিকার না পেয়ে শেষমেশ ফেসবুক লাইভে নিজের অসহায়ত্ব তুলে ধরেন এবং ৩ দিনের ব্যবধানে নিহত হন।

banner

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন চরম অবনতির দায়ভার পুলিশ প্রশাসন কোনভাবেই এড়াতে পারে না। কেননা হত্যার হুমকির বিষয়ে অবগত হয়েও পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা এবং সাম্প্রতিক সময়ে হত্যাকাণ্ডগুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখা দৃষ্টিভঙ্গির কারণে ঈদের দিনে আবারো একজন কিশোরকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা এবং অপর জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ করে এক ব্যক্তিকে ফিল্মি কায়দায় হত্যা করা হয়েছে। খোদ জেলা পুলিশের ব্রিফিংয়ে গত দুই সপ্তাহে ছয়টি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা উঠে এসেছে। এর মধ্যে চারটি সংঘটিত হয় ঈদের ছুটিতে।

হত্যাকাণ্ডগুলো- গত ৯ এপ্রিল সদর উপজেলার কালীনগর এলাকায় মনিরুলকে কুপিয়ে হত্যা, গত ১৩ এপ্রিল শিবগঞ্জ উপজেলার নয়ালাভাঙ্গা ইউপি সদস্য মো. আলমকে কুপিয়ে হত্যা, গত ১৯ এপ্রিল সদর উপজেলার ঝিলিম ইউপিতে মিথুন ওরফে কৃষ্ণ বর্মণ নামে অটোরিকশাচালককে কুপিয়ে হত্যা, একই দিন খাইরুল আলম জেমকে কুপিয়ে হত্যা, ২২ এপ্রিল সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের জনতার হাটে মো. জিয়া নামে এক ব্যক্তিকে ককটেল হামলা চালিয়ে হত্যা এবং একই দিন কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে ফাহাদ নামের এক কিশোরকে হত্যার ঘটনা।

এতগুলো হত্যাকাণ্ডের পরও বলতে গেলে আমরা সকলেই নীরব-নির্বাক। জেম হত্যাকাণ্ড ও এর আগে পরের ঘটনাগুলো আমাদের নাগরিক দ্বায়িত্ববোধের দরজায় কড়া নাড়তে ব্যর্থ হয়েছে।

কেন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন অবনতি ঘটেছে তা আপামর জনসাধারণের কাছে ইতোমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। অথচ একসময়ের আলোকিত এই শহরে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এখনো সেভাবে কেউ এগিয়ে আসেনি? আমাদের আজকের এই নীরব দর্শকের ভূমিকা জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা ও জাতীয় চার নেতাকে জেলে হত্যার পরবর্তী সময়ে আমাদের নির্লজ্জ নির্লিপ্ততাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে অথচ আমরা নির্বিকার!!

এ্যাডভোকেট মো. আসলাম-উদ-দৌলা
সাধারণ সম্পাদক, রাজশাহী প্রেসক্লাব
আহ্বায়ক, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ চাই কেন্দ্রীয় কমিটি
ও বিচারপতি বজলুর রহমান ছানা স্মৃতি পরিষদ।

You may also like

Leave a Comment

NatunMatra Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: অভিলাস দাস তমাল

বার্তা সম্পাদক: এহেসান হাবিব তারা

উপদেষ্টা: মাসুদ রানা রাব্বানী

নিউমার্কেট পূবালী  ব্যাংকের গলি, সুলতানাবাদ, ঘোড়ামারা, রাজশাহী – ৬১০০

মোবাইল: ০১৭৭২-৩৫৯২২২, ০১৭১১-৯৫৪৬৪৭ 

মেইল: news@natunmatra24.com

Edtior's Picks

Latest Articles

Natun Matra All Right Reserved. Designed and Developed by Ecare Solutions

শিরোনাম: