Home » অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা কি ভুলপথে নামছি

অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা কি ভুলপথে নামছি

by নিউজ ডেস্ক
views

অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা কি ভুলপথে নামছি

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল যে বললেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) মার্কিন ডলারের সঙ্গে টাকার অবমূল্যায়নের পরামর্শ দিয়েছিল, তা ঠিক নয়। আমরা বলেছিলাম, ডলারের বাজারদরকে অর্থনীতির অন্য সব চলকের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে। যত দূর মনে পড়ে, অবমূল্যায়নের পরামর্শ দিয়েছিল মূলত তৈরি পোশাক উৎপাদক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। তারা এ দাবি সব সময়ই করে থাকে। অর্থমন্ত্রী হঠাৎ পরিপ্রেক্ষিত ছাড়া কেন সিপিডিকে মিলিয়ে এ প্রসঙ্গ তুললেন, তা জানি না। এর ওপর মন্তব্য করা কঠিন।

তবে টাকার মূল্যমান যে চাহিদা ও জোগানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা উচিত, তা আমরা বলি। এটা করতে গেলে মুদ্রানীতির সঙ্গে আর্থিক নীতির সমন্বয় থাকা যে জরুরি, তা–ও আমরা বলে থাকি। তা না হলে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আবার টাকার মূল্য অবনমনের অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে, তা মোকাবিলা করতে হয় আর্থিক নীতির মাধ্যমে। আর্থিক নীতির সঙ্গে সংযোগ থাকতে হয় মুদ্রানীতির। আর্থিক নীতি প্রণয়ন অর্থ মন্ত্রণালয়ের মূল কাজের মধ্যে পড়ে। মুদ্রানীতি প্রণয়ন বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজ; মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণও বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম কাজ।

সম্প্রতি আমরা ডলারের একাধিক হার দেখতে পেয়েছি। এর খারাপ প্রভাবও দেখা গেছে। চার মাসেই টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে ২০ শতাংশ। গড়ে উঠেছে ডলারের কালোবাজার, যেখানে ডলারের দাম আনুষ্ঠানিক দরের চেয়ে পাঁচ থেকে সাত টাকা বেশি থাকে, এমনকি আরও বেশি। এটা অনেকটা বাজারের সমান্তরাল বাজার। আধুনিক অর্থনীতির লক্ষণ এটা নয়। বিষয়টি হলো, অর্থনীতির সঙ্গে যোগসূত্র আছে, দেশে এমন সব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নীতিগত সমন্বয়হীনতা আছে। তা আছে বলেই আমাদের আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে যেতে হয়েছে।

গণমাধ্যমে দেখলাম, মূল্যস্ফীতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘অর্থনীতির জন্য মূল্যস্ফীতি জরুরি। যাঁরা অর্থনীতি নিয়ে চিন্তা করেন না, তাঁরা মূল্যস্ফীতি না চাইতে পারেন। আমরা দেখেছি, ২০২৩ সালে মূল্যস্ফীতি সাধারণ মানুষকে কতটা ভুগিয়েছে। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি বাদ দিলে দেশে টানা ৯ মাস মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ শতাংশের ওপর; বলা যায়, ১০ শতাংশের কাছাকাছি, তা–ও আবার সরকারি পরিসংখ্যানে।

banner

অর্থমন্ত্রী কীভাবে এত উচ্চ মূল্যস্ফীতির পক্ষে অবস্থান নিলেন, তা জানি না। তবে এটা ঠিক, অর্থনীতিতে ন্যূনতম মূল্যস্ফীতি থাকতে হয়, সেটা বড়জোর ৪ থেকে ৫ শতাংশ। দেশে এক বছর ধরে যে মূল্যস্ফীতি চলছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, বরং অন্যায্য। ৮ থেকে ৯ শতাংশ মূল্যস্ফীতি বিনিয়োগ কমে যাওয়ার কারণ হয়। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে লেনদেনের ভারসাম্য বজায় থাকে না এবং ব্যবসায়ীদের ঋণপত্র (এলসি) খুলতেও সমস্যা হয়। রপ্তানিকারকদের রপ্তানি প্রতিযোগিতার সক্ষমতা কমে যায়।
তথ্য-উপাত্তের বিভ্রান্তি তৈরিসহ অর্থমন্ত্রী এখনো যেসব কথা বলছেন, সেসব কথা ও এমন মনোভাব আমরা ভয় পাই। মনে হয়, বিরাজমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে আবারও কি ভুলপথে নামতে যাচ্ছি আমরা?

লেখক: সম্মাননীয় ফেলো, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)

You may also like

Leave a Comment

NatunMatra Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: অভিলাস দাস তমাল

বার্তা সম্পাদক: এহেসান হাবিব তারা

উপদেষ্টা: মাসুদ রানা রাব্বানী

নিউমার্কেট পূবালী  ব্যাংকের গলি, সুলতানাবাদ, ঘোড়ামারা, রাজশাহী – ৬১০০

মোবাইল: ০১৭৭২-৩৫৯২২২, ০১৭১১-৯৫৪৬৪৭ 

মেইল: news@natunmatra24.com

Edtior's Picks

Latest Articles

Natun Matra All Right Reserved. Designed and Developed by Ecare Solutions

শিরোনাম: