একজন মা যে দিনের একটা বড় সময় কাটিয়ে দেন টিভিতে হারাম জিনিস দেখে, একজন মা যিনি কুর’আনে কি আছে তা কখনো খুলেও দেখেন না, একজন মা যিনি তার কলিজার টুকরা সন্তানকে নিজ উদ্যোগে গানবাদ্য, নাচানাচি আর হারামে অভ্যস্ত করে তোলে সেই মা থেকে আমরা কেমন প্রজন্ম আশা করতে পারি?!
সেই মায়েদের বলছি, দিন রাত এক করে স্বামী স্ত্রী মিলে টাকা কামিয়ে ভালো প্রতিষ্ঠানে সন্তানকে পড়ালেখা করানো আর সন্তানের ভালো ক্যারিয়ার গড়াই যদি হয় আপনাদের জীবনের মূল উদ্দেশ্য তবে মনে রাখবেন, আপনার এই সন্তান যদি আল্লাহ ভীরু না হয় তবে এই সন্তানেরাই হবে আপনাদের বিপদের কারন!
সন্তানকে ইসলাম শেখানো মানে কেবল একজন হুজুর রেখে আরবি শেখানো না। ইসলাম কোনো ফালতু বিষয় না। ইসলাম আমার ধর্ম আর দুনিয়া আমার জীবন এমনটা ভাবলে চলবেনা। ইসলাম মানে দ্বীন, জীবনব্যবস্থা, ইসলাম একটি ফুল প্যাকেজ। আপনি আপনার সন্তানকে তখনই পরিবর্তন করতে পারবেন যখন আপনি নিজে ইসলামের দ্বারা নিজেকে পরিবর্তন করবেন এবং আল্লাহ যদি চান, তবেই।
মনে রাখবেন একজন নেক সন্তান আপনার দুনিয়া এবং আখিরাতের সম্পদ, মৃত্যুর পর আপনার সাদকায় জারিয়্যাহ।
আর একজন খারাপ সন্তান আপনার দ্বীন, দুনিয়া ও আখিরাতের ধ্বংস, মৃত্যুর পর থেকে কিয়ামত পর্যন্ত আপনার আযাবের কারন। আপনার আযাবে জারিয়্যাহ।
যদি আখিরাতে বিশ্বাসী হয়ে থাকেন তবে কল্পনা করুন, সেদিন আপনার পাপী সন্তানকে যখন ফেরেশতারা টেনে হিঁচড়ে জাহান্নামে নিতে চাইবে আর আপনার কলিজার টুকরা সন্তান চিৎকার করে বলবে আজ আমাদের এই অবস্থার জন্যে আমাদের বাবা মায়েরা দায়ী! অতএব তাদেরকে আগে জাহান্নামে নিক্ষেপ করুন!
লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লাবিল্লাহ…
এবার সিদ্ধান্ত আপনার। আল্লাহ আপনাদের এবং আপনাদের সন্তানদের উপর রহম করুক।
– “হে ঈমানদারগণ ! তোমরা নিজেদেরকে এবং পরিবারের লোকদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও।” ( সুরা আত তাহ্রীম )
– “আর সে সব লোক যারা আল্লাহ্র উপর ঈমান এনেছে অতঃপর তাদের সন্তানগণও ঈমানের সাথে তাদের পথ অনুসরণ করেছে, তাদের সাথে তাদের সন্তানদেরকে আমি মিলিত করবো। আর আমি তাদের কোন আমল বিনষ্ট করবো না। প্রতিটি লোক যা কিছু আমল করে তা আমার নিকট লিপিবদ্ধ থাকে। (সুরা আত্তুর: ২১ )
-“অথচ তারা একজন আরেকজনকে সুস্পষ্টভাবে দেখতে পাবে, (সেদিন) অপরাধী ব্যক্তি আযাব থেকে (নিজেকে) বাঁচাতে মুক্তিপণ হিসাবে তার পুত্র সন্তানদের দিতে পারলেও তা দিতে চাইবে। (দিতে চাইবে) নিজের স্ত্রী এবং নিজের ভাইকেও। এবং নিজের পরিবারভুক্ত এমন আপনজনদেরও, যারা তাকে (জীবনভর) আশ্রয় দিয়েছিলে।
(সুরা আল মাআরিজ:১১-১৩ ) সন্তান- সাদাকায়ে জারিয়্যাহ না কি গুনাহে জারিয়্যাহ!