Home » দেশবরেণ্য ৬ জন কর্মকৃতীময় গুণীজনকে সংবর্ধনা দিলেন রাসিক মেয়র লিটন

দেশবরেণ্য ৬ জন কর্মকৃতীময় গুণীজনকে সংবর্ধনা দিলেন রাসিক মেয়র লিটন

দেশবরেণ্য ৬ জন কর্মকৃতীময় গুণীজনকে সংবর্ধনা দিলেন রাসিক মেয়র লিটন

by নিউজ ডেস্ক
৫৭ views

দেশবরেণ্য ৬ জন কর্মকৃতীময় গুণীজনকে
সংবর্ধনা দিলেন রাসিক মেয়র লিটন

এহেসান হাবীবঃ রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে দেশবরেণ্য ৬জন কর্মকৃতীময় গুণীজনকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় নগর ভবনে গ্রিনপ্লাজায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত গুণীজনদের ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপন, উত্তরীয় পরিয়ে তাঁদের হাতে ক্রেস্ট ও সংবর্ধনা স্মারক তুলে দেন সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা স্মারকপত্রের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।
সংবর্ধিত গুণীজনেরা হলেন, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এ.বি.এম খায়রুল হক, আইন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এ.টি.এম ফজলে কবীর, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, লেখক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান, প্রখ্যাত সাংবাদিক, কলামিস্ট ও লেখক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবেদ খান এবং শিক্ষাবিদ, নাট্যকার ও লেখক অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদ অনুপস্থিত থাকায় তাঁর নিকট প্রেরণের জন্য তাঁর প্রতিনিধিকে উত্তরীয়, ক্রেস্ট ও সংবর্ধনা স্মারক প্রদান করা হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্বাগত সম্ভাষণে রাসিক মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, একসঙ্গে এতো গুণীজনদের সংবর্ধনা দেওয়ার সৌভাগ্য আমরা বেশি পাই না। দেশবরেণ্য গুণীজনেরা দেশের জন্য, জাতির জন্য, স্বাধীনতার মূল স্রোতকে ধরে রাখবার জন্য, সংবিধানকে সমুন্নত রাখবার জন্যে যা যা করেছেন, সেই ঋণ শোধ করা সম্ভব নয়। তাঁরা তাঁদের কর্মের মাধ্যমে আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন।
রাসিক মেয়র বলেন, ১৯৭৪ সালে ভারতের সাথে বাংলাদেশের ৭টি নৌরুট নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরাগান্ধীর সাথে সমঝোতা চুক্তি হয়। ওই ৭টি নৌরুটের মধ্যে ভারতের মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান থেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী হয়ে রূপপুর ও পাকশী দিয়ে আরিচা হয়ে ঢাকা পর্যন্ত একটি নৌরুট রয়েছে। এই রুট চালু করে সারা বছর যদি পদ্মায় নাব্যতা রাখা যায় তবে উভয় দেশ লাভবান হবে। নানা রকম পণ্য আনা নেয়া করা যাবে। পণ্য মুখর হয়ে উঠবে রাজশাহী বন্দর। বিশেষ করে ভারত থেকে আমরা প্রতি বছর কোটি কোটি টন পাথন আমদানি করে থাকি। এই পাথর দিয়ে আমরা রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণ করি। ভারতের পাকুর ব্যান্ডের পাথর আমরা আমদানি করি। এই পাথর আমাদের রাজশাহীর বর্ডার থেকে খুব বেশি দূরে নয়। ভারতের ধুলিয়ান থেকে বিহারের পাকুর খুব বেশি দূরে নয়। এই পাথর যদি আমরা বার্জে করে নদী পথে আনতে পারি রাজশাহীতে খুব সহজে তা ঢাকা পর্যন্ত বার্জে করে পৌছে দেয়া যাবে। এতে করে আমাদের আমদানি ব্যয় ও উৎপাদন খরচ কমবে। এই কাজটি করা খুবই সহজ। সামান্য কিছু স্থানে পদ্মা নদীর ড্রেজিং প্রয়োজন। আপাতত শুধুমাত্র একটি কাস্টমস হাইজ এবং একটি জেটি করলেই এই বন্দরটি চালু করা সম্ভব।
রাসিক মেয়র আরো বলেন, রাজশাহী কৃষি প্রধান অঞ্চল। এখানে কৃষিপণ্য নির্ভর শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এখানে একটি পুর্নাঙ্গ কৃষি বিশ^বিদ্যালয় হওয়া খুবই দরকার। কৃষি বিশ^বিদ্যালয় হলে কৃষি নির্ভর রজশাহীতে এ বিষয়ে রিসার্চ হবে। যা কৃষিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ উদ্ভাবনে ভূমিকা রাখবে। কৃষির মাধ্যমে এই অঞ্চলের অর্থনীতিকে বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য দেন বিশিষ্ট সমাজসেবী ও নারীনেত্রী শাহীন আকতার রেণী। অনুষ্ঠানের সমাপনী ঘোষণা করেন রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন।
অনুষ্ঠান মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার, রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটন, সাংবাদিক রাশেদ চৌধুরী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ.বি. এম খায়রুল হক বলেন, ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের আখরে লেখা আমাদের সংবিধান। সংবিধান নিয়ে যেভাবে কাটাছেড়া করা হয়েছে, তা কষ্টের। আপনারা খেয়াল রাখবেন, এই সংবিধানটা যেন আমরা আমাদের বক্ষে ধারণ করি, এটাকে প্রটেক্ট করি।
তিনি আরো বলেন, রাজশাহীতে ২০১৫ সালে এক বার এসেছিলাম। এবার এসে দেখছি আমূল পরিবর্তন। রাজশাহীর দৃশ্যমান এই উন্নয়ন প্রমাণ করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেন, রাজশাহী সবুজে বিবর্তিত। নিজ চোখে দেখে যেতে পারলাম কী করে একটি নগর জীবন্ত ও সজীব হয়ে ওঠেছে। পুরো দেশ ঘুরে দেখুন এমন পরিচ্ছন্ন ও সুবজ নগরী গড়ে তুলতে পারছি না। রাজশাহী সবুজ ও গণমুখী নগর হিসেবে গড়ে উঠছে। জীবন আর শিক্ষা কখনো আলাদা হতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ আর কোনদিন হবে না। কারণ মানুষের এখনো পণ্য ক্রয়ের সক্ষমতা রয়েছে। গ্রামের কৃষি শ্রমিকরা এখন প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় করেন। দুর্ভিক্ষ শুধুমাত্র উৎপাদনহীনতার জন্য হয় না, মানসিকতার জন্যই দুর্ভিক্ষ হয়। সবার আগে মানসিকতার ইতিবাচক পরিবর্তন প্রয়োজন।

প্রখ্যাত সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, রাজশাহীর প্রতি পদে পদে ইতিহাস কথা বলে। রাজশাহীর গম্ভীরা দেশের সংস্কৃতির অঙ্গনে আলাদা মাত্রা এনে দিয়েছে। যতবার এই রাজশাহীতে এসেছি এই শহরের প্রতি ভালোবাসা ততোই বেড়েছে। রাজশাহী প্রতিটি গুণিমানুষের জন্য নগর উদ্যান। রাজশাহী সবুজ চিরতরুণ নগরী।
মেয়র কর্তৃক সংবর্ধনার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী বলেন, ১৮৯২ এর নভেম্বরে রাজশাহী শহরে এসেছিলেন রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর। এরপর ১৯২৮ সালে আরেকবার আসেন। তিনি যতবার রাজশাহী এসেছেন ততোবার তিনি রাজশাহী দেখে মুগ্ধ হয়েছেন, তার মন ভালো হয়েছে। রাজশাহীর ঐতিহ্য শিক্ষা নগরীর ঐতিহ্য। অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় রাজশাহীর সন্তান। ইতিহাস ঐতিহ্যের নগরী রাজশাহী। এই ভূমিতে জন্মেছেন রাজশাহীর কৃতি সন্তান শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হেনা।

You may also like

Leave a Comment

NatunMatra Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: অভিলাস দাস তমাল

বার্তা সম্পাদক: এহেসান হাবিব তারা

উপদেষ্টা: মাসুদ রানা রাব্বানী

নিউমার্কেট পূবালী  ব্যাংকের গলি, সুলতানাবাদ, ঘোড়ামারা, রাজশাহী – ৬১০০

মোবাইল: ০১৭৭২-৩৫৯২২২, ০১৭১১-৯৫৪৬৪৭ 

মেইল: news@natunmatra24.com

Edtior's Picks

Latest Articles

Natun Matra All Right Reserved. Designed and Developed by Ecare Solutions

শিরোনাম: