Home » রামুতে বৌদ্ধ বিহারে আগুন,বড় নাশকতার মূলহোতা বিএনপি কর্মী শাহাজাহান গ্রেপ্তার

রামুতে বৌদ্ধ বিহারে আগুন,বড় নাশকতার মূলহোতা বিএনপি কর্মী শাহাজাহান গ্রেপ্তার

by নিউজ ডেস্ক
views

রামুতে বৌদ্ধ বিহারে আগুন,বড় নাশকতার মূলহোতা বিএনপি কর্মী শাহাজাহান গ্রেপ্তার

কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধ পল্লীতে ২০১২ সালের মতো আবারও আগুন দিয়ে ম্যাচাকার করে দেওয়ার জন্য পরিকল্পিত নাশকতার ঘটনায় সরাসরি জড়িত এক বিএনপির সক্রিয় কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া যুবকের নাম আবদুল্লাহ ইয়াছির প্রকাশ শাহজাহান (২৩)। শাহজাহান বিএনপির পদ-পদবিবিহীন একজন সক্রিয় কর্মী এবং তাঁর বাবা আবদুল করিম হচ্ছেন রামু উপজেলার ফতেখারকুল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। এ ঘটনার নেপথ্যে কারা রয়েছে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, গত রবিবারের (৭ জুন) দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন থেকে দৃষ্টি ফেরানোর উদ্দেশ্যে আবারও আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। তা-ও নির্বাচনের এক দিন আগে ৫ জানুয়ারি (শুক্রবার) রাতে রামুর প্রায় দেড় থেকে দুই শ বছরের প্রাচীন কাঠের তৈরি উসাইচেন বড় ক্যাং বৌদ্ধ বিহারে অগ্নি সংযোগের ঘটনাটি ঘটে। রাত ২টার পর রামু সদরের চেরাংঘাটা এলাকায় ওই বৌদ্ধ বিহারের সিঁড়িতে লাগানো আগুন স্থানীয় লোকজন দ্রুত নিভিয়ে ফেলার কারণে বড় ধরনের ম্যাচাকার থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।

পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, রামুতে বৌদ্ধ বিহার আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে সারা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা ছিল।

সেই সঙ্গে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি ও নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলারও চেষ্টা হয়েছিল।
সিসিটিভি ফুটেজ এবং রামু দমকল বাহিনীকে আগুন লাগার সংবাদ দেওয়া একটি মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরেই পুলিশ গত ৯ জানুয়ারি চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় শাহজাহানকে। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফজুল ইসলাম বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, আগুন যাতে নেভানো সম্ভব না হয় সে জন্য পূর্বপরিকল্পিতভাবে দুর্বৃত্তদল আগেভাগে পরিকল্পনামাফিক রামু দমকল বাহিনীকে ফোন দিয়ে ৩৫ কিলোমিটার দূরের দুর্গম এলাকা ঈদগড় বাজারে আগুন লাগার ভুয়া সংবাদ দেয়। এরপর রামু বিদ্যুৎ বিভাগে বৌদ্ধ বিহার এলাকায় আগুন লাগার আরেক ভুয়া খবর দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার জন্য বলা হয়।

banner

পরিকল্পনা মাফিক রাত ২টার পর দুর্বৃত্তরা বিহারের সিঁড়িতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।

পুলিশ সুপার বলেন, রামু দমকল বাহিনীর স্টেশন কর্মকর্তা সৌমেন বড়ুয়ার নেতৃত্বে দ্রুত দমকলের একটি ইউনিট উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে ঈদগড়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। কিন্তু ঈদগড় বাজারে পৌঁছে তারা বুঝতে পারেন খবরটি ছিল ভূয়া। আগুন লাগানোর ঘটনার পর দিন শনিবার (৭ জানুয়ারি) বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মংকিউ রাখাইন বাদি হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে রামু থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুনয়ন বড়ুয়া।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, প্রযুক্তির সহায়তায় বহুল আলোচিত অগ্নিকান্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মো. আবদুল ইয়াছির প্রকাশ শাহজাহান নামে এক যুবককে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ এলাকা থেকে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাঁর স্বীকারোক্তি মতে বুধবার সন্ধ্যায় রামুর ফতেখাঁরকুলের হাইটুপি ভূতপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার দিন রাতে ব্যবহৃত সেই মোবাইল সিমটিও উদ্ধার করা হয়। পুলিশ তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিম্যান্ডের আবেদন করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।

ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভুট্টো বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া আবদুল্লাহ ইয়াছির প্রকাশ শাহজাহান বিএনপির কোনো পদে না থাকলেও সে বিএনপির একজন একনিষ্ট কর্মীর মতই কাজ করে থাকে। এ বিষয়ে আলাপের জন্য শাহজাহানের বাবা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুল করিমের মোবাইলে কয়েকবার চেষ্টা করেও তিনি মোবাইল রিসিভড করেননি। পুলিশ সুত্রে আরো জানা গেছে, গ্রেপ্তার হওয়া শাহজাহান গত বছরের ২৮ অক্টোবর বিএনপির ঢাকা কর্মসুচিতেও অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর ফেসবুকেও এসব প্রমাণ রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে একটি ভুয়া ছবিকে কেন্দ্র করে রামুর বৌদ্ধ পল্লীতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেই ঘটনার জের ধরে রামু,উখিয়া ও টেকনাফের ২০ টি বৌদ্ধ বিহারসহ বৌদ্ধ পল্লী আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যায়। পড়ে সরকার বিহারগুলো সেনাবাহিনীর মাধ্যমে নতুন করে নির্মাণ করে দেয়।

You may also like

Leave a Comment

NatunMatra Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: অভিলাস দাস তমাল

বার্তা সম্পাদক: এহেসান হাবিব তারা

উপদেষ্টা: মাসুদ রানা রাব্বানী

নিউমার্কেট পূবালী  ব্যাংকের গলি, সুলতানাবাদ, ঘোড়ামারা, রাজশাহী – ৬১০০

মোবাইল: ০১৭৭২-৩৫৯২২২, ০১৭১১-৯৫৪৬৪৭ 

মেইল: news@natunmatra24.com

Edtior's Picks

Latest Articles

Natun Matra All Right Reserved. Designed and Developed by Ecare Solutions

শিরোনাম: