Home » ৬৪ জেলা ভ্রমণ করলেন রাবি শিক্ষার্থী আয়াতুল্লাহ

৬৪ জেলা ভ্রমণ করলেন রাবি শিক্ষার্থী আয়াতুল্লাহ

by নিউজ ডেস্ক
views

আয়াতুল্লাহ, ফাইল ছবি।

রুপ-রস আর সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশ। রূপসী মায়ের বুকে পদচারণার প্রতিটি মূহুর্তই আন্দোলিত করে অন্তরাত্মা, করে পরিতৃপ্ত। বাংলা মায়ের গ্রামের মেঠো পথ থেকে শুরু করে বিশালদেহী পাহাড়-পর্বত কিংবা চিরযৌবনা সমুদ্র সৈকত তার প্রতিটি পরতে-পরতে মিশে রয়েছে নান্দনিকতার কোমল ছাঁয়া। মায়াবতীর স্নিগ্ধ ছোঁয়াতে নিবিড়েই হারিয়ে যাওয়া যায় প্রকৃতির অনিন্দ্য সুন্দর স্বাদগন্ধ আস্বাদনে। এভাবেই ৬৪ জেলায় ভ্রমণ শেষে বাংলা মায়ের রুপের বর্ণানা করছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্রমণপিপাসু শিক্ষার্থী আয়াতুল্লাহ।

আয়াতুল্লাহ রাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বেড়ে ওঠেন ঝালকাঠি জেলা সদর উপজেলাতে। ছোটবেলা থেকেই ছিলেন তীব্র ঘোরাঘুরি পাগল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে প্রথমবারের মতো যাত্রা শুরু করেন তিনি। সময়টি ছিল তখন ২০১৮।

তবে তিক্ত অভিজ্ঞতার সাক্ষী হন প্রথম ভ্রমণেই। টাকার স্বল্পতায় ৫ বেলা না খেয়ে এবং রেলস্টেশনে রাত কাটান তিনি। অভিজ্ঞতা তিক্ত হলেও থেমে জাননি তিনি। অদম্য ইচ্ছে শক্তি সঞ্চয় করে আবারো নেমে পড়েন রুপের রাণীর মুক্তোঝরানো হাসিমুখের পাণে। ২০২২ সালের শেষের দিকে নেত্রকোনা জেলা ভ্রমণের মাধ্যমে দেশের ৬৪ জেলা ভ্রমণ শেষ হয় তাঁর।

ভ্রমণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে কথা হয় তাঁর সাথে। জানান বিস্তারিত ভ্রমণকথা। নানান চমকপ্রদ নান্দনিকতায় পরিপূর্ণ স্থান, ভয়ংকর স্থাপনা, রাতের পাহাড়ে হাঁটার অনুভূতি, ঝর্ণার কলকলিতে মুগ্ধ হওয়া কিংবা সমুদ্রের স্রোতের সাথে নিজেকে হারিয়ে ফেলার মতো অভিজ্ঞতা।

banner

তিনি বলেন, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন একটি জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসেবে পরিগণিত। বিভিন্ন সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, মানুষের আচার-আচরণ, বিভিন্ন জেলার মানুষের বৈশিষ্ট্যের বৈচিত্র্যতা, ইতিহাস, ঐতিহ্য ইত্যাদি জানতে এবং শিখতে আমি সবসময় উৎসুক। আমি সমগ্র দেশকে  জানতে চেয়েছি, দেশের প্রতিটি কোনায় কোনায় পদচিহ্ন রাখতে চেয়েছি। বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা শত-শত পুরাতন ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো নিজ চোখে দেখতে চেয়েছি। এগুলো দেখাই ছিল আমার মূল লক্ষ্য। আমি সেটা পেরেছি।

তবে সবসময় তার ভ্রমণ সুখকর ছিল না। মুখোমুখি হতে হয়েছে বিষন্নতার। তার ভাষ্য, আমি দুইবার ছিনতাইয়ের স্বীকার হয়েছি। সেসময় ছিনতাইকারীরা আমাকে লুট করেছিল। তাছাড়া পরিবারের সমর্থন ছিল না। ভ্রমণের জন্য তাই হাত খরচের টাকা বাঁচিয়ে রাখতাম।

তাঁর দেখা দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে তিনি জানান, সৌন্দর্যের দিক থেকে সবচেয়ে ভালো লাগার স্থান হলো বান্দরবান। আমার নিকট একটি স্বপ্নের মতো জায়গা। আমিয়াখুম ও নাফাখুম ঝর্ণায় যাওয়াটা আমার সারাজীবন মনে থাকবে। তার পাশাপাশি দেশের সবচেয়ে বড় পাহাড় তাজিংডং বিজয় করাটা আমার স্মৃতির মানসপটে ভাসছে। বান্দরবানের পরে মৌলভীবাজার ভালো লেগেছে। এ জেলায় প্রবেশ করা মাত্রই চা এর ঘ্রাণে আমি বিমোহিত হয়েছিলাম। তার পাশাপাশি মৌলভিবাজারের হামহাম জলপ্রপাত এখনও আমার চোখে ভাসে। মৌলভীবাজারের পরে ভালো লেগেছে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের রাত্রিটা। ভালো লেগেছে ‘মেঘের বাড়ি’ রাঙামাটির ‘সাজেক ভ্যালি’ এবং কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন।

ভ্রমণকালে তিনি বেশ কিছু সামাজিক বিষয় নিয়েও কাজ করেছেন। এগুলো হলো সন্তানকে শিক্ষার দানের গুরুত্ব, মাদকের ভয়াবহতা, ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের গুরুত্ব, পরিবেশ সচেতনতার ব্যাপারে গুরুত্ব, ভ্রমণের গুরুত্ব ও শিশু শ্রম বন্ধকরণ ইত্যাদি।

সবশেষে সকলকে মাতৃভূমির সৌন্দর্যে বিমোহিত হতে, তার রূপ-রসে নিজের অস্তিত্বে খুঁজে নিয়ে দেশপ্রেমের মহান ব্রত ধারণ করার আহ্বান জানান তিনি।

You may also like

Leave a Comment

NatunMatra Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: অভিলাস দাস তমাল

বার্তা সম্পাদক: এহেসান হাবিব তারা

উপদেষ্টা: মাসুদ রানা রাব্বানী

নিউমার্কেট পূবালী  ব্যাংকের গলি, সুলতানাবাদ, ঘোড়ামারা, রাজশাহী – ৬১০০

মোবাইল: ০১৭৭২-৩৫৯২২২, ০১৭১১-৯৫৪৬৪৭ 

মেইল: news@natunmatra24.com

Edtior's Picks

Latest Articles

Natun Matra All Right Reserved. Designed and Developed by Ecare Solutions

শিরোনাম: